মো: হাচিবুর রহমান,কালিয়া(নড়াইল):-নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি খালের দুপাশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশিক খানের নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলার ভূমী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। উপজেলার নড়াগাতি বাজার থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়ে বাঔসোনা ব্রিজঘাট পর্যন্ত প্রায় ৭.৮০ কিঃমিঃ পর্যন্ত এ অভিযান চলে। এ সময় নড়াগাতি এলাকায় খালের দুপাশে থাকা শতাধিত পাকা, আধাপাকা বাড়ি ও দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়।
নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে অবৈধ ঘরমালিকদের নোটিশ নিয়ে স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছিল। তারা নিজ থেকে স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় শ্রমিক লাগিয়ে এবং বেকু দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী ঘরমালিকদের অভিযোগ ভিন্ন। ঘরমালিকরা বলছে তাদের ঐ জমিতে বসবাস করতে সরকার বন্দোবস্ত দিয়েছে এবং কোন প্রকার নোটিশ বা সময় না দিয়েই তাদের ঘরথেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। একনকি উচ্ছেদ অভিযান ঠেকানোর জন্য স্থানিয় প্রভাবশালীদের মোটা অংকের টাকা দিয়েছে ঘরমালিকরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘরমালিক বাঔসোনা গ্রমের আমিন উদ্দিন মোল্লার ছেলে শহিদ মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, তাকে পূর্বে কোন নোটিশ না দিয়েই হঠাৎ করে তার দোকানঘরটি বেকু দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে। অপর এক ঘরমালিক নড়াগাতি গ্রামের আকবর শেখের ছেলে রবিউল শেখ বলেন, তিনি সরকারের কাছ থেকে ঐ জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন এবং তার বৈধ কাগজপত্র রয়েছে তবুও তার স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নড়াগাতি গ্রামের একাধিক ঘরমালিক বলেন, তাদের ঘরের উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে স্থানিয় থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম, স্থানিয় প্রভাবশালী বাবুল, মনির, মোরাদ ও শহীদকে ঘরপ্রতি ১০ হাজর টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। নড়াগাতি গ্রামের এক ঘরমালিক কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি আমার ঘর বাচাতে নগদ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি এবং মোট ৫ নক্ষ ৬০ হাজার টাকা বিভিন্ন ঘরমালিকদের কাছ থেকে নিয়ে ঐ ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে।
তবে ঐ সকল অভিযোগ অস্বিকার করেছে নড়াগাতি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম। তিনি বলেন, হয়ত মাটি কাটার কথা বলে কেউ টাকা নিতে পারে তবে এ ব্যাপারে তার কোন সম্পক্ততা নেই বলে তিনিি জানান।
এ বিষয়ে নড়াইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশিক খান বলেন, অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে নড়াগাতি খালকে রক্ষা করতে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। যে সকল ঘরমালিকরা বলছে তাদের সরকারী বন্দোবস্ত রয়েছে তাদের মূলত বন্দোবস্তের মেয়াদ গত বছরেই শেষ হয়ে গিয়েছে এবং জমির প্রকৃত মালিক সরকার, সরকার চাইলে যেকোন কাজে এই জমি ব্যবহার করতে পারেন তবে এ উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে স্থানিয় কেউ জদি টাকা নিয়ে থাকে এ ব্যাপারে সরকারের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এই জমির মালিক সরকার, সরকার তার জমি বুঝে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঘরমালিকদের চাপ দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে স্থানিয় যে সকল প্রভাবশালীরা মোটা অংকের টাকা আত্বসাত করেছে তাদের এই অপরাধ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানিয়রা
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply