‘আওয়ামী লীগে নতুন সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের কেউ হলেও তা আমলে নেয়া হবে না’ বলে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে আলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মুক্তিযুদ্ধের ওপর চরম আঘাত অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’র চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আবীর আহাদ ।
আজ এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ প্রশ্ন রেখে বলেন, ওবায়দুল কাদের কি এই বক্তব্য তাঁর নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি থেকে দিয়েছেন, নাকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিশেবে দলীয় চিন্তাধারা থেকে দিয়েছেন—-এ-বিষয়ে তাঁকে অবশ্যই জাতির সামনে সুস্পষ্টভাবে ব্যাখা করতে হবে । স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি তাঁর এহেন পিরিতি কিসের ইংগিত বহন করে ? মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী কোটি কোটি লোকদের দূরে ঠেলে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের পরিবারের প্রতি এমন উদার নমনীয়তা ও প্রেমের পরিণতির কারণে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ও ভবিষ্যত কী হতে পারে, তা কি তিনি একটিবার ভেবে দেখেছেন ?
আবীর আহাদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সিঁড়ি হিশেবে ব্যবহৃত হতে দেয়ার পশ্চাতে কী রহস্য লুকিয়ে আছে তা দেশবাসী জানতে চায় । আর এর ব্যাখ্যা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডকেই দিতে হবে । কারণ ওবায়দুল কাদের সেই হাইকমান্ডের নেতৃত্বাধীন দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি ও দলীয় মুখপাত্র । দলের চিন্তাধারা ও কর্মসূচি তিনি দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করে থাকেন মাত্র ।
আবীর আহাদ বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার রূপকার । আওয়ামী লীগ একটি আবেগ । আওয়ামী লীগ একটি বিবেক । আওয়ামী লীগ একটা প্রতিষ্ঠান । এর চেতনার সাথে স্বাধীনতা, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ, প্রগতি ও দেশপ্রেমিক জনগণের অনুভূতি জড়িত । সেই আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী ও লুটেরা অপশক্তির অভয়ারণ্যে পরিণত করার কারো কোনোই অধিকার নেই । তারপরও যদি কেউ করেন, তাহলে সেটি হবে তাঁর বা তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি । অতীতে মুসলিম লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তান অর্জিত হলেও তাদের সীমাহীন লোভ ও ভুলের কারণে পাকিস্তান ভেঙে গেছে, দলটিও চিরতরে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে ।
আবীর আহাদ বলেন, ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন । সম্ভবত: তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত । তাঁর এহেন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হয়তোবা তাঁর চৈতন্যের উদয় হবে । তিনি তাঁর ঐ জঘন্যতম বক্তব্য নিশ্চয়ই প্রত্যাহার করে নেবেন । অন্যথায় তাঁকে আওয়ামী লীগ ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি ।
—–আবীর আহাদ
চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply