মুকসুদপুরে দাফনের ৬ মাস পর কবর থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ উত্তোলন
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ-
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরে দাফনের ৬ মাস পর ময়না তদন্তের জন্য জ্যোতি হীরা ওরফে সোহাগী নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
রোববার দুপরে গোপালগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকারের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়ের উপস্থিতিতে মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের কবর থেকে ওই মৃতদেহ তোলা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধূ জ্যোতি হীরা মুকসুদপুর উপজেলার কলিগ্রামের জ্যাকব হীরার মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কলিগ্রামের আদ্বিত্য রায়ের ছেলে অচিন্ত রায় একই গ্রামের জ্যাকব হীরার মেয়ে জ্যোতি হীরা ওরফে সোহাগীকে বিয়ে করে ঢাকার মিরপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামী অচিন্ত রায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। জ্যোতি হীরা টাকা নিতে অস্বীকার করায় তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে হীরা। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে জ্যোতি ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি কলিগ্রামে চলে আসে। জ্যোতির বাবা টাকা দিতে না পারায় শ্বশুরবাড়িতে এসে স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন মারাত্মক মারপিট করে আহতাবস্থায় জ্যোতিকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিসাধীন অবস্থায় গত ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মারা যান জ্যোতি। পরে জোত্যির মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে এলাকার লোকজন স্থানীয় ভাবে বিচার সালিশ করে দেয়ার আশ্বাস দেয়। লাশ দাফনের পর বিচার দেয়া নিয়ে তালবাহানা শুরু করলে বিগত বছর ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে। পরে জ্যোতির বাবা জ্যাকব হীরার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে, অচিন্ত রায় আদ্বিত্য রায়, যোগেশ রায় ও অন্তরা রায়কে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালত বাদীর মামলা আমলে নিয়ে মুকসুদপুর থানায় এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিলে মুকসুদপুর থানা মামলাটি এফআইআর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মুকসুদপুর থানার এসআই নব কুমার ঘোষ জানান, মামলাটির তদন্তভার আমার উপর পড়লে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করার প্রয়োজন পড়ে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লাশ উত্তোলন করার জন্য আবেদন করলে তিনি মঞ্জুর করেন। পরে রোববার দুপুরে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়ের উপস্থিতিতে কবর থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়।
ময়নাতদন্তের জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply