মায়ানমার সামরিক বাহিনীর তাড়া খেয়ে
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী বারো লক্ষ রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিশ্বসম্প্রদায় তথা জাতিসংঘ বোধ হয় বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মানবিক আশ্রয়ের কথা ভুলে গিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা অকৃতজ্ঞের সীমা ছাড়িয়ে এখন আমাদের দেশের দেশী-বিদেশি এনজিও ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সাথে হাত মিলিয়ে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে যে, তারা কোনো অবস্থাতেই মায়ানমারে ফিরে যাবে না ! তারা জোর করে বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার কথা বলছে !
উপরন্তু তারা নানান মারণাস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে ! বাংলাদেশের স্থানীয় অধিবাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হত্যা ও হামলা চালাচ্ছে ! বাংলাদেশের মাটিতে মাদকসহ নানান অসামাজিক কর্মে লিপ্ত হচ্ছে ! তারা ছলেকলেকৌশলে এদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে গিয়ে নানান অপরাধকর্মের সাথে জড়িত হয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে। বাংলাদেশ সরকারসহ এদেশের মানুষের পক্ষে মানবিক ও ভব্যতার খাতিরে আর এতো বড়ো একটা অশিক্ষিত অসভ্য বর্বর ও বেয়াড়া সম্প্রদায়কে প্রতিপালন ও নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কিন্তু আমাদের নিজেদের দেশের নিরাপত্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে এর একটি তড়িৎ সমাধানে আসতেই হবে। এবং সেই সমাধানটি যেকোনো মূল্যে আমাদেরকেই করতে হবে।
একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সচেতন নাগরিক হিশেবে আমি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে একটি সুপারিশমালা পেশ করছি। যথা :
(এক) আসন্ন জাতিসংঘের অধিবেশনে সব দেশের প্রতিনিধিদের কাছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের অবস্থান ও আমাদের দেশের রাজনৈতিক আর্থসামাজিক নিরাপত্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়টি তুলে ধরে, মায়ানমারকে তাদের নাগরিকদের তাদের দেশে ফেরত নেয়ার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়ার সর্বদেশ সমন্বিত আল্টিমেটাম আদায় করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে;
(দুই) জাতিসংঘ রাষ্ট্রসমূহের আল্টিমেটাম আদায় করা সম্ভব না হলে বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী ভারত ও চীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বাংলাদেশ সরকার মায়ানমারকেই একটি আল্টিমেটাম দিয়ে বলতে পারে যে, এতোদিনের মধ্যে তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে;
(তিন) মায়ানমার সরকার বাংলাদেশ সরকারের আল্টিমেটাম গ্রহণ না করলে, তখন এখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের সাত/দশ দিন সময় দিয়ে সরাসরি বলে দিতে হবে : যেপথে এসেছিলে সে-পথে পাড়ি জমাও ;
(চার) এতেও যদি কাজ না হয়, তাহলে আমাদের দেশের নিরাপত্তা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে তিন দিক থেকে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ধাওয়া দিয়ে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে—-তাতে পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেনো এবং
(পাঁচ) মায়ানমার যদি এ-স্তরে এসে বাংলাদেশের ওপর সামরিক অভিযান চালায়, তাহলে পূর্ব-থেকে প্রস্তুত রাখা আমাদের সামরিক বাহিনীকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলতে হবে।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি। আমাদের সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণ রয়েছে। ফলে আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারণ আমাদের ‘জয়বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় চেতনার কাছে মায়ানমার একটি শিশু। তবে আমরা কোনো অবস্থাতেই আগে মায়ানমারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাবো না। যেমন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করার পরই আমরা তাদেরকে প্রতিহত করেছিলাম। এ-কারণেই আমরা আমাদের সেই দুর্দিনে কতিপয় বন্ধু রাষ্ট্রসহ বিশ্বজনমত পেয়েছিলাম। এখানেও একই নীতি অবলম্বন করতে হবে।
উপরোক্ত সুপারিশমালা আমার একান্তই ব্যক্তিগত চিন্তার ফসল। আমার থেকেও হয়তো আরো সমৃদ্ধ সুপারিশ বেরিয়ে আসতে পারে। হোক চুলচেরা বিশ্লেষণ—–
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply