জয়ন্ত শিরালী জয় (গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি):- গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসকরা কর্মস্থল ছেড়ে কক্ষ তালা বন্ধ করে প্রীতিভোজ ও মিলন মেলার নামে পিকনিকের আনন্দ উৎসব করছেন।
গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের আয়োজন সামিল হয়েছেন চিকিৎসকসহ সকল কর্মকর্তারাও। হাসপাতালে জরুরী বিভাগের ১ জন চিকিৎসক ছাড়া দেখা মেলেনি অন্য কোন চিকিৎসকের। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পায়নি।
মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কর্মস্থলে ছিলেন না অধিকাংশ চিকিৎসক। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চাপাইল মধুমতি রিসোর্টে গিয়ে দেখাযায় উচ্চশব্দে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে আছে চিকিৎসকেরা।
আনন্দ উপভোগের জন্য ছামিয়ানা টাঙিয়ে কেউবা গল্পে মেতে, কেউবা সেলফিতে ব্যস্ত। আবার অনেক চিকিৎসককেই দেখা যায় প্রতিষ্ঠানের ২ টি সরকারি গাড়িতে করে পিকনিকস্থলে যেতে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেক চিকিৎসকই সরে পড়েন।
চাপাইল মধুমতি রিসোর্টে প্রীতিভোজে আশা গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন এ সম্পর্কে আমার কিছুই বলার নেই।
অন্যদিকে দুরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সকাল থেকে অপেক্ষা করতে থাকে। চিকিৎসা সেবা না পেয়ে হতাশা গ্রস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। কেউবা আবার যাচ্ছেন প্রাইভেট ক্লিনিকে।
চিকিৎসা নিতে আসা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরগোবরা গ্রামের বাসিন্দা গোলেজা বেগম বলেন, আমি সকাল থেকে টিকিট কেটে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষায় আছি। দুপুর ২ টা পর্যন্ত বসে আছি এখন পর্যন্ত ডাক্তারের দেখা পাইনি। আমরা গরিব মানুষ টাকা নেই, তাই বাইরের ক্লিনিকে গিয়ে ডাক্তার দেখানোর সামর্থ নেই। অসহায় হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছি।
গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগের ১০১ নং কক্ষ হতে ২১৮ পর্যন্ত প্রত্যেকটি কক্ষই তালাবদ্ধ। জানতে চাইলে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর সহকারি বলেন, স্যার নেই, তাই তালা বন্ধ করে চলে যাচ্ছি। স্যারেরা না থাকলে আমরা থেকে কি করব।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক অসিত কুমার মল্লিক বলেন, এ ভাবে বহির্বিভাগ খালি রেখে যাওয়ার কথা না। কারা কারা গিয়েছে আগামীকাল খোঁজ নিয়ে দেখব।
হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডাঃ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের ডাক্তারাই এ প্রীতিভোজ ও মিলন মেলার আয়োজন করেছে। দুপুর ২টার পর আমি ও সহকারী পরিচালক ডাঃ অসিত কুমার মল্লিক বহিঃবিভাগে ঘুরে দেখেছি। তখন মাত্র দুইজন রোগী ছিল। তাদেরকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply