মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কানামাছি খেলার শেষ কোথায় ?
—–আবীর আহাদ
ক্ষমতার দম্ভে বুদ হয়ে থাকা আত্মম্ভরি অমানুষেরা যখন হেয়ালিপূর্ণ কণ্ঠে বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কারের কথা বলে আন্দোলন করেছে, সেটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে যাতে কেউ আর কোটা সংস্কারের কথা বলতে না পারে ! যাদের কোটা দরকার তারা যদি আন্দোলন করে, তখন আবার ভেবে দেখা হবে—–
এটা কি কোনো দায়িত্বশীল সুষ্ঠু মানুষের কথা ? এটা কি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অপমান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত নয় ? ধরুন, যাদের মুক্তিযোদ্ধা কোটা দরকার তারা আন্দোলন করলো, তখন সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কোটা পুনর্বহাল করা হলো—–সেই কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে কোটাবিরোধীরা আবার আন্দোলন গড়ে তুললো—–সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আবার কোটা বাতিল করা হবে না, তার গ্যারান্টি কোথায় ? এভাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কানামাছি খেলা চালিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের সাথে যে জঘন্য তামাশা করা হচ্ছে, সেটা কি কোনো দায়িত্বশীল মহল ভেবে দেখেছেন ? মুক্তিযোদ্ধাদের নামের সাথে এভাবে যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত দেয়ার হচ্ছে, এটাও কি কেউ বুঝতে পারেন না ? মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে, সেটাও কি তারা তলিয়ে দেখেছেন ? কারণ মুক্তিযোদ্ধা কোটাটি ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর একটি উপহার । সেটি উড়িয়ে দিতে যাদের হৃদয়ে একটু রেখাপাত করে না, তারা আসলে কারা.? প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকার ফলেই এসব দু:খজনক তামাশার আবহ সৃষ্টি হয়েছে । সাংবিধানিক স্বীকৃতি না থাকার ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে না । তাদের ব্যক্তি ও পারিবারিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সাধিত হচ্ছে না । তাইতো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকাংশ আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে । তাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বিঘ্নিত হচ্ছে । পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একাত্তরের সেই পরাজিত রাজাকার অপশক্তি আজ মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর নির্মম প্রতিশোধ নেয়া শুরু করেছে ।
এ-তামাশা ও নির্মমতার অবসানকল্পে আমি তাই সর্বাগ্রে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেছি । সেই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র নামের ওপর কলঙ্ক লেপনকারী অমুক্তিযোদ্ধাদের উচ্ছেদের কথা বলেছি । এবং এ-প্রক্রিয়া ও প্রয়াসের মাধ্যমেই কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের ঐতিহাসিক জাতীয় মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে—–অন্য কোনো পন্থায় নয় ।
আবীর আহাদ, সভাপতি একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply