ফেসবুক ও অস্থির ভাইরাল প্রতিযোগীতা
——রিয়াজ মুস্তাফিজ
বগুড়ায় ডিস ক্যাবলে তার নিজ প্রোডাক্শনে নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র তথাকথিত নির্মাণ করে পরিবেশন করতেন ডিস আলম। এভাবেই চলছিল তার খায়েশ মিটানোর হিরো গিরি। দেশ বিদেশে ফেসবুক, ইউটিউব যখন ঝড় তুলে ফেললো তখন ডিশ আলমও ঢুকে গেলেন ঘোর লাগা এই বায়বীয় জগতে। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি হয়ে গেলেন ভাইরাল আলম। সারা দেশে বিদেশে ডিস আলম হয়ে উঠলেন হিরো আলম।
পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে সার্চ ইঞ্জিন ঘাটলেই হিরো আলমের অবাক করা সব ভিডিও ক্লিপ ভেসে আসে সামাজিক সব মাধ্যমে। আমরাও হিরো আলমকে সস্থা বিনোদন হিসেবে হাসি, ব্যঙ্গর খোরাক হিসেবে বেছে নিয়েছি। টিকটকের নামে কি সব যাচ্ছেতাই বিনোদন ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রকমের ভিডিও এডিটিং ডাবিং করে, মৌলিকত্ব নষ্ট করা কোন ব্যাপারই না।
দুর্ঘটনায় মানুষ মারাত্বক আহত হয়ে পড়ে আছে, আমরা দাঁড়িয়ে ভিডিও করছি। বিবেক, মানবিকতা কোন পর্যায়ে গেলে এমনটা করা যেতে পারে?
লাইভে আসছে সিফাতউল্লাহ সেফু। বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করছেন দেদারছে। এ তালিকায় নাম আরো দীর্ঘ হবে।
নাটক, থিয়েটার, সিনেমা, গান, বাদ্যশিল্প কঠিন সাধানার বিষয়। কেউ কেউ পৃষ্টপোষকতা বা কপালের জোরে জনপ্রিয়তা পান কেউ পান না। তাই বলে কি মান সম্পন্ন শিল্পের কোন মূল্য থাকবেনা?
মান সম্পন্ন নির্মান কি এ দেশে হচ্ছেনা? হচ্ছে। কিন্তু তার কতটুকুই বা ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে।
আমরা যতটা হিরো আলম টাইপের লোকদের সস্থায় হিরো বানাচ্ছি।
সাধারন মানুষেরর পছন্দ কে উগড়ে দেওয়া যাবেনা। তাদের ব্যক্তিগত বিনোদনকে ছোট করে দেখা ভূল হবে। নানান মানুষের নানান পছন্দ, হরেক রকম রুচি। সবার রুচি এক হলে তো আর সানাইরা ভাইরাল হতোনা।
নিজের ফেসবুক আইডি ইউটিউব চ্যানেল বিখ্যাত করতে, কি সব ভাইরাল করছি আমরা।
নানান ভূইফোড় পেইজ, আইডি, গ্রুপ সস্থায় জনপ্রিয় হতে, বিখ্যাত হতে ধর্মীয় সহানুভূতি পেতে মরিয়া। অতিরিক্ত কমেন্ট শেয়ারে তাদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে।
ফেসবুক!! যতটা প্রয়োজনীয় ঠিক ততটায় অস্থির এবং বিরক্তিকর।
এই অদ্ভুদ জগৎটাতে যাতের ভাইরাল হওয়ার কথা তাদের খুব কমই ভাইরাল হয়। বেশিরভাগ ভাইরাল হয়ে ওঠে, অপ্রয়োজনীয় ব্যাপার গুলো।
ব্যক্তি আলম অনেক কষ্ট করে মানুষ হয়েছেন। তার মধ্য সুপ্ত ইচ্ছা ছিল অভিনয় করা
তিনি নিজ খরচে অভিনয় করেছেন। তার অভিনয়, নির্মান কতটুকু গ্রহনযোগ্য? কতটুকু মেসেজ আছে?
আমরা ভাইরালের নামে কোন ধারাটাকে তুলে ধরছি। কাকে তথাকথিত বিখ্যাত করছি?
সস্থা বিনোদন অসুস্থ অস্থির একটা সিষ্টেমে আমরাই ঢুকিয়ে দিচ্ছি।
অনেকেই প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক সোস্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় তুলেছেন। টিকে থেকেছেন ক’দিন। মানসম্পন্ন, জীবনঘনিষ্ঠ, সুষ্ঠ ধারার শিল্প কর্মই টিকে থাকে অনেক দিন এমন কি শত শত বছর।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply