প্রিয় বর্ষা………
যখন ঝুম বৃষ্টি নামে আমি হারিয়ে যাই, আমার থেকে। আমার ভেতরের আমি দলছুট খেলি বৃষ্টির হাত ধরে। আনমনে দেখতে থাকি……..
তেপান্তরের ভেজা মাঠ, ধোঁয়াটে সবুজ গ্রাম, জমাট বাধা দুরের গাছ গাছালী।
গভীর রাতে টিনের চালের ফিসফিসানি আমায় সংগ দেয় নিদারুন একাকিত্বে। কাছে এসে চিমটি কেটে জাগ্রত করে। গোপনে ভালবেসে যায় বৃষ্টির দল। কাক ভেজা ভিজে উঠি, বৃষ্টির সাথে মিশে যাই। ভেজা বাদাড়,ক্ষেতের আইল, যুবুথুবু দূর্বা ঘাস আমায় মায়াবী সুরে ডাকে। আমি হারিয়ে যাই ঝিঁঝিঁ ডাকা বৃষ্টি সন্ধ্যায়।
রিমঝিম বৃষ্টির সাথে দিশেহারা হই, দারুন আলিঙ্গনে। উকি দেয় ছেড়ে আসা শৈশব, দুরন্ত কৈশরের বাধভাঙ্গা উল্লাস। দল বাধা দুষ্ট ছলের দল নেমে যায় পাড়ার ডোবায়। পরিত্যক্ত মাঠে ফুটবলেরর গড়াগড়ি। কাদামাখা শরীর নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া ভরে ওঠা নর্দমায়। খড়ি হাতে মায়ের আদরের শাসন। মায়ের কাছে আমার আত্বপক্ষ সমর্থন।
উচ্ছলে পড়া জলের দাপাদাপি, আর ঠান্ডা জ্বরের হঠাৎ উপদ্রপ।
সবাই ফিরে ফিরে আসে এই বর্ষায় অবচেতনে।
ভরা বর্ষায় পলি মাকা ঘোলাটে জল যখন দু’ কুল ছাপিয়ে যায়। নদীগুলো নববধুর সাজে সেজে ওঠে। লাল পেড়ে শাড়ির সদ্য লাজুক লজ্জাবতীর মত। ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ের হাসির ফোয়ারা ছুটিয়ে যায়। রঙ্গিন পালে ভাটিয়ালির সুর জড়িয়ে এগিয়ে যায় মাঝি, বৈঠা হাতে।
অকুল যৌবনা প্রিয় বর্ষা,
তোমার এলোকেশি খোঁপায় গুঁজে দিলাম একগুচ্ছ কদম। কেয়া বোঝাই কাগজের নৌকা ভাসিয়ে দিলাম তোমার ঠিকানায়।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply