সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ- সামছুর আলী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও পাননি পদ মর্যাদা ও কোনো প্রকার ভাতা। অথচ ১৯৭১ সালে দেশে যুদ্ধ শুরু হলে সেই যুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহন করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা সামছুর আলী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১২ নং বল্লী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
সামছুর অালী ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে বাড়িতে আর বসে থাকতে পারেন নি । যুদ্ধে অংশ গ্রহন করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে ভারতীয় সীমান্তবর্তী ভাদিয়ালী হাকিমপুর চলে যান। সেখানে পৌঁছে নাম দেন মুক্তি ফৌউজে। নিতে থাকেন ট্রেনিং। ট্রেনিং শেষ হতে না হতেই ঝাঁপিয়ে পড়েন অপারেশনে।
১ম দিনেই গোলাবারুদ বহন করে হানাদার বাহিনীর কয়েকটি ক্যাম্প ধ্বংস করেন তিনি।
মিশন শেষ করে ফিরে আসেন ক্যাম্পে। তখন ক্যাম্প কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল্লাহ সামছুর আলীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘এগিয়ে যাও’ তুমিই পারবে শামছুর আলী।
এ দিকে অজানা এক রাজাকারের মাধ্যমে পাক বাহিনী জানতে পারে শামছুর আলী মুক্তিযোদ্ধে। ফলে সামছুর আলীর পিতা এবং মেজো ভাইকে তুলে নিয়ে যায় মিলিটারী বাহিনী। তাদের উপরে চালানো হয় নির্মম অত্যাচার। জানতে চাওয়া হয় শামছুর আলী কোথায় গেছেন এবং কোথায় থাকেন। শিকার না করাতে তাদের উপর চালানো হয় অমানুষিক অত্যাচার। কালো কাপড় পরিয়ে রাখা হয় মৃত্যুর জন্য। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেই দিন মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরে আসেন পিতা এলাই বক্স দফাদার এবং মেজো ভাই আনছার আলী।
দেশ স্বাধীন হলো সামছুর আলী সহ আরো অনেকে ফিরে আসেন বাড়িতে। সেই থেকে আর কেউ কোনো দিন খোঁজ খবর নেই নাই। সেই মানুষটি কেমন আছে? কিভাবে আছে??
মুক্তিযোদ্ধা সামছুর আলী দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে অশ্রুসিক্ত নয়নে তার বর্তমান দূরাবস্থার কথা জানান। পরিতাপের বিষয় তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে।মেয়েটি বিয়ে হয়ে গেছে এবং ছেলে তিনটি বিয়ে করে যার যার মত সেই পরিবার নিয়ে তারা অালাদা হয়ে থাকে। কেউ খোঁজ খবর নেই না ফলে কষ্টের সাথে দিন কাটছে তার । আগের মত চোখে ভালো দেখতে না পেরে উপার্জন করতে ব্যর্থ। ফলে অনেক দূরাবস্থার মাঝে কাটছে তার দিন । তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ সরকার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়ে দুঃখ দূর্দশার মানবেতর জীবন থেকে মুক্তি পেতে চান। ফিরে পেতে চান তার ন্যায্য অধিকার।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply