একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি লেখক গবেষক আবীর আহাদ বলেছেন, দেশের সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা সীমাহীন দুরাবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। একদিকে বয়সের ভার, নানান রোগাক্রান্ত, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, অপরদিকে তাদের সন্তান-সন্ততি বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত। জীবনের শেষবেলায় তাদের জীবনে একটু স্বস্তি ও শান্তি প্রদান করা রাষ্ট্রেরই কর্তব্য।
আজ এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ উপরোক্ত মন্তব্য করে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়ন করে, তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের অবর্ণনীয় দুর্দশার কথা মানবিক বিবেচনায় নিয়ে মাসিক ভাতা চলমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে যৌক্তিক পর্যায়ে বৃদ্ধি, তাদের চিকিৎসার জন্য মাসিক ভাতার সাথে কমপক্ষে সাত হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা প্রদান, গৃহহীনদের জন্য বিনাসুদে মাসিক ভাতা থেকে তিন/পাঁচ হাজার টাকা কেটে রাখার বিধান রেখে কমপক্ষে বিশ লক্ষ টাকা গৃহঋণ প্রদান করতে পারেন।
বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, দেশের অতীত ও বর্তমান বাস্তবতার আলোকে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে পিছিয়ে-পড়া থেকে উঠিয়ে আনার লক্ষ্যে ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা’ যৌক্তিক পর্যায়ে পুনর্বহালের পাশাপাশি বিকল্প পন্থায়ও সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের শুধুমাত্র বেকার ছেলে-মেয়েদের প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারেন। যেমন, পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম পর্যন্ত পড়া ছেলে-মেয়েদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, এসএসসি থেকে এইচএসসি পাশ পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী, স্নাতক পাশ করাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা এবং স্নাতক সম্মান থেকে মাস্টার্স পাশ করাদের প্রথম শ্রেণী কর্মকর্তা হিশেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর/পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, আধা সরকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারী ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে পারেন। তিনি বলেন, আমার একান্ত ধারণা, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের প্রেক্ষিতে তাদের অধিকাংশ সন্তানই সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। সে-ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পঁয়ত্রিশ করা হলে তাদের সংখ্যা পনেরো থেকে বিশ হাজারের বেশি হবে বলে মনে হয় না।
পরিশেষে আবীর আহাদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্য বীর্য ত্যাগ ও বীরত্বকে কোনোকিছু দিয়েই পরিমাপ করা যায় না। তবে যেহেতু তারাও সমাজের মানুষ, তাদেরও মর্যাদা নিয়ে একটু শান্তি ও স্বস্তি সহকারে সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে, সেহেতু এ-দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
আবীর আহাদ
সভাপতি
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply