নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা-ভাটিয়াপাড়া সড়ক বালু ব্যবসায়ীদের দখলে। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি বালুর বড় বড় স্তূপ। ড্রেজার ও কার্গো থেকে পাইপ দিয়ে বালু সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। বালুর সঙ্গে পানি এসে সড়কে পড়ছে। এতে সড়ক ভেঙে ও দেবে যাচ্ছে। আবার বালুবাহী ১০ চাকার ট্রাক চলাচল করায় এই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে খানাখন্দের। এতে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কর্তৃপক্ষ বারবার পদক্ষেপ গ্রহণ করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ভাটিয়াপাড়া-কালনা সড়কের জঙ্গলমুকুন্দপুর এলাকার ফারুক মিয়ার দোকানের সামনে একটি ১০ চাকার ট্রাক দেবে গিয়ে রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাটিয়াপাড়া মোড় থেকে দক্ষিণে মোটা পাইপের সাহায্যে ড্রেজার থেকে বালু এনে সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। পাইপ দিয়ে তীব্র গতিতে পানি বের হয়ে সড়কে পড়ছে। একটু সামনে রাস্তার দুই পাশে বালুর বিশাল বিশাল উঁচু স্তূপ। বালু রাখার কারনে সড়ক নিচু হয়ে গেছে। ভাটিয়াপাড়া-কালনা সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কের জঙ্গল মুকুন্দপুর এলাকার মানিক শেখের বাড়ি থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। এই অংশ দিয়ে হেলেদুলে চলছে যানবাহন। কখনো কখনো ঘটছে দুর্ঘটনা। পাশে মধুমতী নদীতে একশো থেকে দেড়শো বালুভর্তি কার্গো রয়েছে। অনেক সময় বালু উড়ে রাস্তায় চলে আসায় চালক ও যাত্রীরা কিছুই দেখতে পান না।
এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা বলেন, এখানে সারাক্ষণ ধুলাবালু উড়তে থাকে। ওপর দিকে ধুলাবালু আর নিচের দিকে কাদাপানি থাকায় রাস্তা দিয়ে চলাচলের কোন উপায় নেই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভাটিয়াপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি বালুর চাতাল রয়েছে। এর মধ্যে মানিক শেখের বাড়ি থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকার সড়ক বেশি ভেঙে গেছে। স্থানীয় ৩০ থেকে ৩৫ জন বালু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন। এরা সবাই কাশিয়ানী ও রাতইল ইউনিয়নের বাসিন্দা। এসব ব্যবসায়ী মধুমতি নদীর বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করে এই সড়কের পাশে রেখে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি মালিকের কাছে বালু বিক্রি করে আসছেন। এসব বালু ১০ চাকার ট্রাকে করে আনা নেওয়ার কারণে রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে দেবে গেছে এবং খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা ওই স্থান থেকে বালু সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক বিভাগ ইতিমধ্যে যেসব ব্যবসায়ী বালুর ব্যবসা করছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করেছেন।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply