সাব্বির আহমেদ সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:- গত ২ নভেম্বর শনিবার থেকে শুরু হওয়া চলতি জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় ১১২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।
এদের মধ্যে জেএসসিতে ৮০ জন এবং জেডিসিতে ৩২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। জানা যায়, উপজেলার দুটি মূলকেন্দ্র ও তিনচি ভেনুতে ৪৯ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার ৪হাজার ২০জন জেএসসি এবং একটি কেন্দ্রে ২৭ টি মাদরাসা থেকে ৮ শ ৪৮ জন জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত ২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জেএসসিতে ৮০ জন ও জেডিসিতে ৩২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। অনুপস্থিত ১১২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৩ জন ছাত্র এবং ৬৯ ছাত্রী রয়েছে।
গত দুইদিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অনুপস্থিত ওই ৬৯ জন ছাত্রীর মধ্যে ৬০ জনই বাল্যবিয়ের শিকার। ওই শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপজেলার হামিদপুর গণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ জন, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ জন, ঠনঠনিয়া নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন, তক্তারচালা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ জন, বেতুয়া,আড়াইপাড়া, হতেয়া, বড়চওনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩ জন করে মোট ১২ জনসহ উপজেলা আরো কমপক্ষে ১৫ উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী অনুপস্থিত রয়েছে।
হামিদপুর গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক হারুন অর রশিদ বলেন, ৬ জন ছাত্রী প্রবেশপত্র না নেওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ৬ জনের ৫ জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। ওদের মধ্যে ১টি মেয়ে অসুস্থ্যতার কারণে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। বড়চওনা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক লাল মিয়াও ছাত্রী অনুপস্থিতির বিষয়ে একই বর্ণনা করেন। সখীপুর পাইলট মডেল গভ: স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব কেবিএম খলিলুর রহমান বলেন- মেয়েদের অনুপস্থিতির কারণ বাল্য বিবাহ।
এদিকে জেডিসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতির বিষয়ে মাদাসার কেন্দ্র সচিব কালিদাস দাখিল মাদরাসার সুপার হাবিবুর রহমান বলেন- তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন অনুপস্থিত অধিকাংশ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি বলেন- অভিভাকদের অসচেতনতায় তারা অগোচরে তাদের মেয়েদের বাল্যবিয়ে দিয়ে দেন এতে তাদের কিছু করার সুযোগ থাকে না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মফিজুল ইসলাস বলেন, সখীপুরে আগে থেকেই শিক্ষার হার কম। অনগ্রসরত ,দারিদ্র, অশিক্ষা, অসচেতনতা, বাল্য বিবাহ ইত্যাদি কারণে শিক্ষা জীবন থেকে এভাবে ঝরে পড়া খুবই দুঃখজনক। নারী শিক্ষা প্রসারে বাল্য বিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে দারিদ্রতা ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুর রহমান জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ১১২ জন শিক্ষার্থী অকালে ঝরে যাওয়া ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply