নিজস্ব প্রতিবেদক :
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি লেখক গবেষক আবীর আহাদ ভুয়াভরা মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রকাশ না করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংজ্ঞার ভিত্তিতে একটি ‘মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় কমিটি’র মাধ্যমে যথাযথ যাচাই বাছাই করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের সর্বশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভুল তালিকা প্রণয়ন করতে যদি আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয় তা নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধারা করবেন। তবে কোনো অবস্থাতেই মুক্তিযোদ্ধারা অন্য কোনো গোঁজামিলের সংজ্ঞায় হাজার হাজার অমুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারমিশ্রিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা মেনে নেবেন না।
আজ এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ উপরোক্ত মন্তব্য আরো বলেন, গতকাল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে দু’লক্ষ একত্রিশ হাজারের একটি সংখ্যা উল্লেখ করে যে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নিরন্তর গবেষণাকর্মে নিয়োজিত আছি তারাই জানি মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কতো হতে পারে। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা নির্ণয়ে বঙ্গবন্ধু সরকার উনিশশো বাহাত্তর সালে যে সংজ্ঞা দিয়ে গেছেন, সেটিকে মূল ধরে আগালে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা কোনো অবস্থাতেই দেড় লক্ষের বেশি হবে না। সংগতকারণে বঙ্গবন্ধু সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞাটি এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সেটি হলো : Freedom Fighters (FF) means any person who had served as member of any force engaged in the War of Liberation.
[মুক্তিযোদ্ধা মানে একজন ব্যক্তি যিনি মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত যেকোনো দলের (ফোর্স) সদস্য হিশেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন]। এটাই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা। এর বাইরে যে তথাকথিত সংজ্ঞা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক বিবেচনার দৃষ্টিভঙ্গি যা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আবীর আহাদ বলেন, অতীত বিএনপি- জামায়াত জোট সরকারের ফর্মুলায় আওয়ামী লীগ সরকার জামুকা নামক যে কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করেছেন যা এখন চলমান—–এই জামুকার চেয়ারম্যান (মুবিমমন্ত্রী)সহ এর সদস্যদের মধ্যে ৯৯% ভাগ সদস্যই সবদিক দিয়ে অযোগ্য। এদের দিয়ে রাজাকারদের তালিকা করাতে গিয়ে যে হযবরল হয়েছে, ঠিক তেমনি এদের হাত দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গোঁজামিলের তালিকা আসার অপেক্ষায় আছে ! কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা তালিকা নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তো বটে, গোটা বাঙালি জাতি কোনো তামাশা ও ছেলেখেলা দেখতে চায় না। অপরদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গোঁজামিলের তালিকা জাতির পিতার কন্যার হাত দিয়ে অনুমোদিত হয়ে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাবে তা ভাবাই যায় না !
আবীর আহাদ প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, একটি নির্ভুল ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযুদ্ধের এস-ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহকে চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারসহ নেতৃস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা লেখক গবেষক সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বিচারপতি-বুদ্ধিজীবী-শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিশন’ গঠন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি ইতিহাস সৃষ্টি করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি ।
আবীর আহাদ
সভাপতি, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply