প্রতিনিধি কাশিয়ানী :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে আইডিয়াল টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজ নামক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিও ভুক্তির আগেই কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে অবৈধ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১৭-০৬-২০১৯ তারিখে উক্ত কলেজের দাতা সদস্য মো. রিজাউল আলম কর্তৃক একটি দরখাস্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিকট উক্ত অবৈধ কমিটি বাতিল করার প্রসঙ্গে দরখাস্ত প্রেরণ করেন।
তিনি উক্ত দরখাস্তে অবৈধ ব্যবস্থাপনা কমিটি সম্পর্কে বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে। প্রবিধান মতে উক্ত জানুয়ারী মাস থেকেই কারিগরি কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হবেন কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
কিন্তু নিয়ম অমান্য করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সৈয়দ লিয়াকত আলী কলেজটিকে পিইডিএফ সংস্থা দ্বারা পরিচালিত দেখিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কমিটি গঠন করেছেন এবং তিনি নিজেই সভাপতি হয়েছেন মর্মে সেটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা কর্তৃক ১০ মে ১৮ ৮২৪/৮৪৮ স্মারকে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন।
অথচ কলেজটি কখনো পিইডিএফ সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয় নাই এবং সংস্থা কলেজকে কোন অনুদান বা জমি দেয় নাই।
অভিযোগকারী দাতা সদস্য মো. রিজাউল আলম আরো জানায়, আইডিয়াল টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচনের জন্য কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময়ে ইউএনও অফিস থেকে কোন প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
অথচ তৎকালীন কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেখিয়ে তার স্বাক্ষরও জাল করে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন দেখিয়ে সৈয়দ লিয়াকত আলী সভাপতি হয়েছেন। তিনি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা প্রকার আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে যাচ্ছেন।
পরবর্তীতে অবৈধভাবে গঠিত ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড ঢাকা কর্তৃক তদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড ঢাকার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জনাব মোস্তফা কামাল বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ তারিখে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে বসে পরিদর্শন শাখার নির্দেশে আমি তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছি। তদন্তে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে কমিটি গঠনের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত রিপোর্ট পরিদর্শন শাখায় প্রেরণ করা হয়েছে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাব্বির আহমেদ বলেন, অবৈধ ব্যবস্থাপনা কমিটির তদন্তকাজ আমার অফিসে বসেই সম্পন্ন হয়েছে তদন্তে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে কমিটি গঠনের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলাবাসী পরিদর্শন শাখার দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত অবৈধ কমিটি বাতিল করে নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান করেছেন এবং কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে অবৈধ সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য এই বিষয়টি নিয়ে স্বাক্ষর জাল করে গঠিত কমিটির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত আলীর সাথে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply