গাবতলি টু আলফাডাঙ্গা
তৌহিদ আফ্রিদী নাঈম
গাবতলি বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠতেই হঠাৎ সামনের সিটে জানালার পাশে বসা মেয়েটার দিকে নজর পড়লো। মেয়েটির চুল গুলো বাতাসে উড়ছিলো মেয়েটির ছিলো অপূর্ব সুন্দর চোখ। ওর চোখে চোখ পড়তেই কোনো পলক ফেলতে পারছিলাম না।
দাঁড়িয়ে ছিলাম গেটে যাত্রী না উঠতে পেরে হৈ চৈ শুরু করতে লাগলো।এ সময় বাস এর কন্টাক্টর সহ যাত্রী ধাক্কা ধাক্কি তে গুতা লেগে আমি বাস এর সামনে পড়ে যাই।
নিজেকে কন্ট্রোল করে নিজের সিট খুঁজতে খুঁজতে দেখি মেয়েটার সিট এর অপজিট পাশে আমার সিট। সিট এ বসলাম।
কিন্তু বাসে যাত্রী ছিলো খুব সীমিত। বসতে বসতে মেয়েটার দিকে বার বার তাকাচ্ছিলাম।
মেয়ে টা ও আড়চোখে মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখছিল আমাকে।
এভাবে সারাটা রাস্তা পার করে দিলাম।ফেরী ঘাটে আসতে বিশাল এক জ্যাম এ আটকে গেলাম বাস থেকে নামতে, বাইরে দেখলাম রোড এর উপরে ডাব বিক্রয় করছিলো। ডাব এর দোকানের গিয়ে ডাব নিলাম ডাব হাতে নিয়ে বাস এর জানালার দিকে তাকিয়ে দেখলাম মেয়ে টা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, চোখ এ চোখ পড়তে লজ্জা পেয়ে চোখ টা ঘুরিয়ে ফেলল।
বেশ কিছু সময় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতর পা ঝিন ঝিন করতে শুরু হলো বাসের সিট এ গিয়ে বাসলাম।
ফেসবুক চালাচ্ছি। হঠাৎ মেয়ে টা নিজের সিট থেকে এসে আমার পিছের সিটে এসে দাড়িয়ে ছিলো।আমি বুঝতে পারিনি মেয়ে টা আমাকে এবং আমার ফেসবুক একাউন্ট কে ফলো করছে।কিছু সময় থেকে আবার নিজের সিট এ চলে গেলো।
ঠিক ৫ মিনিট পর একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এলো আমার আইডিতে,এছাড়া ম্যাসেঞ্জার এ একটা ইমোজি দিয়েও একটা মেসেজ আসে।
আইডি নাম ছিলো গুঞ্জা চৌধুরী।
আমি খুব চিন্তিত মেয়ে টা কি ভাবে পেলো আমার একাউন্ট।
আইডি তে ডুকে হাই-হ্যালো শুরু হলো কিছু সময় পর বাস ফেরী তে উঠলো।
আমি বাস থেকে নামতে মেয়েটা এস এম এস দিলো কোথায় জান? বাইরের পরিবেশ টা খুব সুন্দর। তাই বাইরে যাই।বাইরে এসে দাঁড়াতে মেয়েটা আমার থেকে ৭ থেকে ৮ হাত দূরে দাঁড়িয়ে ছিলো।
রোদ এর তাপ মাত্রা একটু বেশি ছিলো। কিন্তু বাতাস টা ছিল
বেশ ভালো। ১০ মিনিট দাঁড়াতেই মাথায় ওড়না দিল। মনে হলো সাক্ষাত একটা বউ দাঁড়িয়ে আছে।
হঠাৎ চোখ এ চোখ পড়তে মেয়েটা মুচকি হাসি দিয়ে লজ্জায় বাস এ চলে গেলো।
কিছু সময় পর ফেরী ঘাটে চলে আসতে বাস এ গিয়ে বসলাম।
মেসেঞ্জারে কথাটা আবার শুরু হলো।কথা বলতে বলতে ফরিদপুর চলে আসলাম। মেয়েটার পানির তৃষ্ণা পেয়েছে খুব লজ্জা বোধ না করে বললো পানির বোতল টা দেওয়া যাবে?
হ্যা যাবে।পানির বোতল টা দিলাম,পানি দিতে ধন্যবাদ দিলো আমি বললাম ধন্যবাদ কেনো পানি টা দিলেন তাই। আমি বললাম পানির অপর নাম জীবন আর একটা জীবন বাঁচানো আমার দায়িত্ব ও কতর্ব্য।
মেয়েটা হঠ্যাৎ ২ মিনিট এর মতো আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
কিছু সময় পর বলে উঠলো আচ্ছা আপনার সাথে কি আর ১ টা বার ও দেখা হবে না?
১ টা বার না বিধাতা চাইলে সারাটা জীবন এর জন্য দেখা হতে পারে।বলতে মুচকি হাসি দিয়ে উঠলো।
এভাবে কথা বলতে বলতে মাঝকান্দি চলে আসলাম।
মেয়েটা হঠাৎ কান্না করতে লাগলো,বললাম কোনো সম্যসা বলতে পারেন।কিছু না বলে অঝোরে চোখ দিয়ে পানি ফেলতে লাগলো।
ও বললো সব সময় নিজের খেয়াল রাখবেন।ভালো থাকবেন।আর কখন ও কোনো মেয়ের সাথে কথা বলবেন না কোনো মেয়ের দিকে তাকাবেন না।
এই বলে মেয়েটা প্রায় ৩ মিনিট তাকিয়ে ছিলো আর অঝোরে পানি পড়ছিলো চোখ দিয়ে। চলে আসলাম বোয়ালমারী চৌরাস্তা। ও বললো বাই।
বোয়ালমারী চৌরাস্তা নামলো আর আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলাম ওর চোখ এর দিকে কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।
বাস টা ছাড়তে ও বলে উঠলো আই লাভ ইউ।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply