গত ২৬ শে মার্চ থেকে দেশে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ও প্রতিরোধের জন্য চলছে অঘোষিত লকড ডাউন। এমতাবস্থায় সরকারী ভাবে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে ঘরে থাকার। সকলের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে সকল সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। সব স্থানে প্রশাসনের পাশাপাশি রয়েছে গণমাধ্যম কর্মীরা। এছাড়া অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে স্বাস্থ্যখাতের প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
কিন্তু সেই বিধিনিষেধের মধ্যেই আজ ০৫ এপ্রিল থেকে সকল গার্মেন্টস ও তৈরি পোষাকশিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় বিজিএমইএ ও বানিজ্য মন্ত্রালয়।
এমন সিদ্ধান্তের বলি হয়ে ঢাকা মুখী হয় অসংখ্য গার্মেন্টস কর্মী। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র থেকে তাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস করার নির্দেশ দেয় অনথায় চাকরী হারাবার ভয় থাকছেই।
সামগ্রিক এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তোলপাড়। একজন সাধারণ কর্মজীবী ফেসবুকে জানিয়েছেন তার আর্তনাদ। মমতাময়ী নেত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ‘মা’ সম্মোধন করে জানিয়েছেন তার চেপে রাখা কষ্টের কথা। আসিফ ইসলাম জোসেফ এর ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগ্রহীত পোষ্টটি হুবহু তুলে ধরা হল।
“আমরা বাঙ্গালী, জাতির জনকের সপরিবারে হত্যাকারী।
পিতার রক্তে রাঙ্গানো আমাদের হাত,
ন্যয় অন্যয় এর কথা অনেকটা হাস্যকর।
তবু দেরিতে হলেও কলঙ্ক মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা।
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
আমরা শিক্ষিত ও উন্নত হচ্ছি, সত্যিই কি তাই?
(জাতির জনক) পিতা মোদের ক্ষমা করো,
আমরা আপনার স্বপ্নের বাঙ্গালী হতে পারি নি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি পিতার যোগ্য সন্তান হলেও
মাগো, ‘আমরা আপনার যোগ্য অনুসারী হতে পারি নি।’
সকল পেশার সর্ব সাধারন, সভ্য সমাজ, দেশের সকল অফিস, কারখানায় কর্মরত সবাই একজাতি আর শুধু পোশাক শিল্পের সবাই কি অন্যজাতি ।।।।
মানবাধিকার কর্মীরা এখন কোথায়?
মাগো সারা পৃথিবী আজ করোনার সাথে লড়াই করছে,
আপনার নির্দেশনায় আমরাও চেষ্টা করছি।
সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাইরা
নিজের জীবন বাজিরেখে সবাইকে ঘরে থাকতে বলছে,
সেই দেশে পোশাক শিল্প খোলা থাকবে, কারখানা চলবে,
বিশ্বের বড় বড় দেশ পারলো না,
আর আমরা নিরাপত্তা বিধান করবো
এবং
সকল পোশাক শ্রমিক কাজ করবে।
৪১ লাখ লোকের পরিবার নিরাপদ (সবাই করোনা প্রুফ)।
পেটেয় দায়ে মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজে ফিরছে,
ঝুকির মধ্যেই কাজও করবে, নয়তো পরিবার চলবে কি করে?
মাগো,
কখনো খোলা, কখনো বদ্ধ, বেতন, ভাতা ( সার্বিক অনিশ্চয়তা)
গণপরিবহন বন্ধ কিন্তু অফিস, কারখানা খোলা !!!
কি করবো আমরা?
পরিবারের জন্য চাকরি ছাড়াও চলতে পারবো না।
মাগো,
আমরাতো তোমারই সন্তান, এমন বিপদের সময়
আমাদের জন্য সঠিক নির্দিষ্ট মেয়াদি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দাও।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
মাগো
আমাদের বিষয়ে আপনার সরাসরি দিকনির্দেশনা দাবি করছি।
বি:দ্র:
( কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কে কোন প্রকার আঘাত/হেয় করার জন্য এই লেখাটি নয়। যদি কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।
লেখাটি শুধু মাত্র নিজের মনের কষ্টটা মায়ের কাছে বলার চেষ্টা করেছি।)””
এইসব আর্তনাদ কি পৌঁছাবে দেশের সকল নীতিনির্ধারকদের কাছে? এমন প্রশ্ন গুলো দানা বেধে রয়েই যায় জনসাধারণের মাঝে৷
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply