প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করার অধিকার রয়েছে—–
‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’র চেয়ারম্যান লেখক-গবেষক আবীর আহাদ আটচল্লিশতম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বলেছেন, যে সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা বীরত্ব ও রক্ত ঝরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মহবিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে, তার সুফল যেন দেশের প্রতিটি মানুষ ভোগ করতে পারে, সে-ব্যবস্থা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে ।
আজ এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, এ-কথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, যে আশা আকাঙ্খা উদ্দেশ্য আদর্শ লক্ষ্য ও অঙ্গীকার নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে অনুপ্রাণিত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ অকাতরে প্রাণ দিয়েছে, নানান নির্যাতন সহ্য করেছেন, মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ঘটেছে —–সর্বোপরি দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে সীমাহীন শৌর্য বীর্য ত্যাগ রক্ত ও বীরত্ব দিয়ে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস-শান্তি কমিটিকে পরাজিত করে বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছিলেন, সেই উদ্দেশ্য আদর্শ লক্ষ্য তো অর্জিত হয়ইনি—–উপরন্তু স্বাধীনতার রূপকার সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনে স্বাধীনতার স্বাদ এখনো আসেনি ! এখনো 90% ভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা মানবেতর জীবনযাপন করে চলেছেন যা একটি বিজয়ী জাতির জন্যে কলঙ্ক । অবিলম্বে তাদের উন্নতর আর্থসামাজিক জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সরকারের আশু কর্তব্য । অপরদিকে বিভিন্ন সরকারের ভুল পদক্ষেপের কারণে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এক বিরাট সংখ্যক লুটেরা দুর্নীতিবাজ ও প্রতারকগোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে । বহু রক্ত ও ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত দেশটি ঐ চক্রের শোষণের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে উপহাস করে !
বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, 1971 সালে এতো বড় একটা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ ঘটে গেলো, মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতা এনে দিলন—-অথচ আমাদের সংবিধানের মূলস্তম্ভ ‘প্রস্তাবনা’র কোথাও ‘মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দদ্য় স্থান পায়নি । অপরদিকে বিভিন্ন সরকার বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পাশ কাটিয়ে নানান গোঁজামিলের সংজ্ঞায় দেড়লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার স্থলে ইতিমধ্যে দু’লক্ষ ত্রিশ হাজারের অধিক লোককে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে । বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঐতিহাসিক অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার জন্যে এতো উচ্চবাচ্য করে আসলেও কারো যেন কিছু করার নেই বলে প্রতীয়মান হয়ে আসছে । তবে সুখের বিষয়, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে বর্তমানে একটা কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন বলেও আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে বলেই তিনি সম্প্রতি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা প্রণয়নের জন্যে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) পুনর্গঠন করেছেন । কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের কোন প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করতে হবে সেই বোধ আছে বলে মনে হয় না । তাদের অতীত ও চলতি কার্যক্রমই তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ । আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তর সালের সংজ্ঞাই মুক্তিযোদ্ধা যাচাইয়ের একমাত্র সঠিক পন্থা ।
পরিশেষে আবীর আহাদ ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ দেশের সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত জন-যুব সমাজকে স্বাধীনতার রক্তিম শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’র প্রয়াসের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সর্বপ্রকার বিভ্রান্তি ও চক্রান্ত প্রতিহত করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন ।
বার্তা প্রেরক—-
খন্দকার জেড ইসলাম মণি
প্রচার সচিব
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমিটি
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply