পরশ উজির :
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। প্রতিদিন সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ অনেকে হচ্ছে পঙ্গু……
প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের প্রাণ ঝরছে এসড়কে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক যেন নিয়ন্ত্রণহীন এক ভয়াবহ আতঙ্কের নাম। বর্তমানে যে পরিমান সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তা ইতিহাসে নজিরবিহীন।
সীমাহীন নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা ঘটছে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক আজ অনিয়ন্ত্রিত, মানুষ খেকো, মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হচ্ছে মানুষ……মানুষের স্বপ্ন।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত মানুষ কে করে চলেছে এতিম, সন্তানহীন, বিধবা ও পঙ্গু…..
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে তবুও যেন সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না বরং অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে সড়ক দুর্ঘটনা।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ গুলো আমাদের কম বেশি সবারই জানা যার মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত গতি বা বেপরোয়া গতি অন্যতম। অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে বা গাছের সাথে ধাক্কা লেগে বা খাদে পড়ে হতাহত হচ্ছে এছাড়াও অবৈধ ওভারটেকিং, চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে বেপরোয়া গতি ও অবৈধ ওভারটেকিং এর কারণে।
সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি কারন হল ফিটনেস বিহীন গাড়ি, মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি রঙ চং করে রাস্তায় নামানো হচ্ছে যার ফলে চলন্ত অবস্থায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্রেক ফেইল করে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এছাড়া অদক্ষ চালক অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক মহাসড়কে গাড়ি চালানোর নিয়মনীতি না জানায় তারা দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।
চালকগণ বিশ্রামহীন ভাবে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত অবস্তায় গাড়ি চালাচ্ছে ফলে এক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে।
এছাড়া মহাসড়কে দ্রুত গতির যানবাহনের সাথে পাল্লা দিয়ে ধীর গতির যানবাহন যেমন–নছিমন,করিমন, অটো,লেগুনা, চলছে যার ফলে গতির তারতম্যের কারণে দ্রুতগামী যানবাহনের সাথে ধীর গতির যানবাহনের ধাক্কা লেগে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই মহাসড়কে ধীর গতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে বা ধীর গতির যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা লেনের ব্যাবস্থা করতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ হতাহত হলেও তার বিনিময়য়ে চালকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হয়েছে এমন নজির বাংলাদেশে নেই। যার কারণে চালকগণ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।
আমাদের এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিরাপদ সড়কের জন্য চালক মালিক ও শ্রমিক সংঘটন গুলো কে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কারন মালিক চালক শ্রমিক যদি সচেতন হয় সতর্ক থাকে তাহলে বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব।
মহাসড়ক গুলোকে ডিজিটাল নজর দারির আওতায় আনতে হবে। ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন সড়কে চলাচলের বিভিন্ন বিধি-বিধান সম্বন্ধে মালিক শ্রমিক যাত্রীদের মাঝে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
সড়ক নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের সকলেরই ভূমিকা রয়েছে। একতাবদ্ধভাবে কাজ করলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব। অননুমোদিত ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, লাইসেন্সবিহীন ও অনভিজ্ঞ ড্রাইভার যেমন দুর্ঘটনার জন্য দয়ী, তেমনিভাবে দায়ী পথচারী এবং যাত্রীগণের অসচেতনতা।
সকলে মিলেই আমাদেরকে আনতে হবে পরিবর্তন। আসুন আগে আমরা নিজেকে বদলাই এবং অন্যকে বদলাতে সহায়তা করি। তাহলেই আমরা সড়ককে নিরাপদ করতে পারবো।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply