ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার ২নং গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব কে পালন করবে তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (ইউনিয়ন পরিষদ শাখা-১) মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নানা দূর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান ও পরিষদের আরও ৬ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর গত ২১ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়, বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হাওয়া পর্যন্ত তার স্থলে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবেন।
পরবর্তীতে গত ২৩ মে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের আহবানে বর্তমান পরিষদের বৈধ ৬ ইউপি সদস্যকে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বহিস্কার হওয়ার কারণে অগ্রাধিকারক্রমে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মোসা. নূরী বেগমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে নূরী বেগম ওই সভায় অসম্মতি প্রকাশ করে। পরে বিধি মোতাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ সাইফুল ইসলামকে সভায় উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর পূর্বক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন। এরপর উপস্থিত সকলে সাইফুল ইসলামকে ইউনিয়ন পরিষদের সমুদয় সম্পত্তি, ক্যাশ ও অন্যান্য দায়-দেনা সম্বলিত চার্জ হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম জানান, ‘সভায় আমি-ই প্রথম নূরী বেগমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে সমর্থন করি। কিন্তু তিনি তখন দায়িত্ব পালনে অসম্মতি প্রকাশ করেন। পরে নূরী বেগমসহ অপর সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন। আমি তিন দিন অফিস পরিচালনা করার পর কিছু লোকের প্ররোচনায় নূরী বেগম এখন আবার ক্ষমতা আকড়ে ধরতে চায়। এর জন্য তিনি বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে।’
এ বিষয়ে নূরী বেগম জানান, ‘আমি আসলে না বুঝেই ওই কাগজে (রেজুলেশন) স্বাক্ষর করেছি। আমি প্যানেল চেয়ারম্যান-২, নিয়মানুযায়ী দায়িত্ব আমার ওপর এসেছে। তাই আমিই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবো।’
ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম, বিল্লাল মোল্যা ও এস এম ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ‘সঠিক প্রক্রিয়ায় নূরী বেগমের সম্মতি নিয়েই সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়েও সাইফুল ইসলাম বিএ পাস। সেইক্ষেত্রে নূরী বেগম অষ্টম শ্রেণি পাস। নূরী বেগম দায়িত্ব পালন করলে ইউনিয়ন পরিষদে উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও জনগণ অশান্তিতে ভুগবে। তাই আমরা নূরী বেগমের স্থলে শিক্ষিত, সৎ ও অভিজ্ঞ সাইফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তাব করছি।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুর রহমান জানান, ‘সঠিক নিয়মানুসারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচন করে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।’
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply