খেলা এখন একটাই। লিভারপুলকে শিরোপা থেকে বঞ্চিত তো করা যাবে না। যত পারো তাদের অপেক্ষায় রাখো। লিভারপুলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি বাকি ম্যাচগুলো থেকে সব পয়েন্টই মনে হয় তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে এখন। টানা তৃতীয় শিরোপার অভিযানে নেমে আগে যেভাবে পা হড়কেছে বারবার, সেই ভুল তারা আর করতে চাইছে না। আজ সোমবার একেবারে নিখুঁত পারফরম্যান্সে যেমন ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করলো বার্নলিকে।
আগের ম্যাচে আর্সেনালের পোস্টে তিন গোল, এদিন পাঁচ- দুই ম্যাচে আট গোল। প্রতিপক্ষ একবারও বল পাঠাতে পারেনি সিটিজেনদের জালে। করোনাকালের অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতি পেপ গার্দিওলার সিটিকে ফিরিয়েছে যেন আগের ভয়ঙ্কর চেহারায়।
এ ম্যাচে সিটিকে রুখতে পারলে বৃহস্পতিবার অ্যানফিল্ডে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে জিতেই শিরোপা জয়ের উৎসবটা সেরে ফেলার আশায় থাকতো লিভারপুল। কিন্তু গার্দিওলার দলকে বার্নলির পক্ষে রুখে দেওয়া এতই সহজ? প্রথম ২০ মিনিট ওরা একটু চেষ্টা করেছে প্রতিটি বলের পেছনে ছুটে জায়গা ভরাট করে খেলার। মনে হচ্ছিল খেলাটা জমতেও পারে। আসলে ভুল মনে হচ্ছিল। ফোডেন-মাহরেজ-সিলভারা আক্রমণের গতিপথ পাল্টে খেলা শুরু করতেই বার্নলির জারিজুরি শেষ। ২২ মিনিটে শর্ট কর্নার থেকে গোল করে সিটিকে এগিয়ে নেন প্রথম ফিল ফোডেন। বিরতির কাছাকাছি সময়ে রিয়াদ মাহরেজের জোড়া গোলে ৩-০। তৃতীয় গোলটি মাহরেজ করেছেন সের্জিও আগুয়েরোর এনে দেওয়া পেনাল্টি থেকে।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ দেখলো ‘ফোডেন’ শো। দাভিড সিলভাকে দিয়ে করালেন চতুর্থ গোল। আর মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার আগে ৬৩ মিনিটে করে গেলেন নিজের দ্বিতীয় ও দলের পঞ্চম গোল। দুটি গোল পরস্পরের সঙ্গে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নামতে পারে। গার্দিওলা মাহরেজকেও হ্যাটট্রিকের সুযোগ দেননি, তুলে নিয়েছেন ফোডেনকেও। টিকি-টাকার সার্থক রূপায়ণকারীর কাছে হয়তো দলগত খেলাটাই আসল, ব্যক্তির অর্জন নয়। সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর নীতিতে এদিন শুরুর একাদশে আটটি বদল করেছেন। এই বিলাসিতা যদিও গার্দিওলাই দেখাতে পারেন। বেঞ্চে এত এত দক্ষ খেলোয়াড়। করোনা-বিরতিতে কয়েকজন চোট থেকেও সেরে উঠেছেন। ওহ্, আরেকটি কারণ হতে পারে, বার্নলির বিপক্ষে বেশি নির্মম হতে চাননি। পাঁচ গোল দেওয়ার পরে প্রতিপক্ষকে দেখানোর কিছু থাকে না।
আর বার্নলি! ইদানীং সিটির মুখোমুখি হওয়া মানেই তাদের পেটপুরে গোল খাওয়া। গত ডিসেম্বরে নিজেদের মাঠে হেরেছে ৪-১ গোলে। ফিরতি ম্যাচে হারলো পাঁচ গোলে। এর আগের সর্বশেষ দুই ম্যাচেও ইতিহাদ থেকে ফিরে গেছে পাঁচটি করে গোল খেয়ে।
দৃশ্যত বার্নলিকে একেবারে ছিঁড়েখুঁড়ে খেতে পারতো সিটি। প্রধানতম নেকড়েটির নাম ফোডেন। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার পর মাত্রই ২০ বছর বয়সী ইংলিশ মিডফিল্ডার বলেছেন, সিটির জার্সি গায়ে এটাই তার সেরা ম্যাচ। প্রতিদিন তিনি একটু একটু করে শিখছেন! শিক্ষাটা সম্পন্ন হলে ফোডেন কীভাবে ফুটবেন তা শুধু সময়ই জানে।
আপাতত সবার জানা এটাই, ৩০ ম্যাচ শেষে লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান ২০ পয়েন্টে নামিয়ে এনেছে সিটি। লিভারপুল ৮৩, সিটি ৬৩। বৃহস্পতিবার অ্যানফিল্ডে যদি রেডদের রুখে দিতে পারে ক্রিস্টালপ্যালেস, শিরোপার নিষ্পত্তি আরেকটু অপেক্ষায় থাকবে।
Leave a Reply