সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গোলান মালভূমিতে সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে এ হামলা চালানো হয়। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমও বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েলের উত্তর দিকে অবস্থিত গোলান মালভূমি। বিতর্কিত এই অঞ্চলটির একদিকে সিরিয়া অন্য দিকে লেবাননের সীমান্ত। সোমবার (৩ আগস্ট) ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, রবিবার সন্ধ্যায় সিরিয়ার দিক থেকে চার জন ব্যক্তি ইসরায়েল সীমান্তের খুব কাছে বোমা রাখার চেষ্টা করছিল। ইসরায়েলি সেনারা তা দেখা মাত্রই সতর্ক হয়। প্রথমে সীমান্তের সেনারা গুলি ছুড়তে শুরু করে। তারপর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। তারাও ওই ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। ইসরায়েল সেনার দাবি, ঘটনাস্থলেই ওই চার ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনার জন্য সিরীয় সরকারকে দায়ী করেছে তেল আবিব। এর বদলা হিসেবে সিরীয় স্থাপনায় বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার কুনাইতরাতে অবস্থিত সিরীয় সেনা ঘাঁটির কমান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেমে হামলা চালানো হয়েছে। বিভিন্ন নজরদারি চৌকি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় হামলা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সিরিয়ার ভূখণ্ডে সব কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটির সরকারকে দায়ী মনে করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আসলে তার বিরুদ্ধে জবাব দেওয়া অব্যাহত থাকবে।’
বিমান হামলার খবর স্বীকার করে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, দামেস্কের কাছে কিছু সেনা চৌকি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি দখল করে ইসরায়েল। এর পর দীর্ঘদিন ওই অঞ্চল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক চলতে থাকে। ১৯৮১ সালে ইসরায়েল পাকাপাকি ভাবে গোলান মালভূমি তাদের অঞ্চল বলে সরকারি ভাবে দাবি করে। কোনও কোনও দেশ ইসরায়েলের দাবিকে সমর্থনও জানায়। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গোলান মালভুমি নিয়ে বিতর্ক এখনও জারি আছে। বিশ্বের বহু দেশই মনে করে যে প্রক্রিয়ায় ইসরায়েল গোলান মালভূমি দখল করেছে এবং নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে, তা অন্যায়। অনেকে এখনও এলাকাটিকে বিতর্কিত অঞ্চল বলেই উল্লেখ করে।
Leave a Reply