প্রতিনিধি কাশিয়ানী :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট ইউনিয়নে সংঘর্ষের পরে পুলিশের মামলায় গ্রেফতার এড়াতে রাজপাট, বরইহাট, দৈহিসারা, বাহিরবাগ, ধোপাপাড়া, শুক্তাগ্রাম ও নাটগ্রাম এখন পুরুষশূন্য হয়ে হয়ে পড়েছে।
গ্রেফতারের ভয়ে পুরুষ ও যুবকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গ্রামগুলোর বাড়িঘরে শুধু নারী ও শিশুরা অবস্থান করছেন। গ্রামের হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে পড়েছে। সবার মধ্যে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। গ্রামজুড়ে অজানা আতংক বিরাজ করছে।
অন্যদিকে এ ঘটনার সাথে জড়িত না থেকেও মামলার আসামী হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বিপ্লব চৌধুরী। তিনি বলেন, আমার মতো আরো অনেকেই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল না। ঘটনার সময় এলাকায়ও ছিল না। এমন ব্যক্তিকেও মামলায় আসামী করা হয়েছে।
এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন, কাশিয়ানী থানার ওসি মো: আজিজুর রহমান।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে কাশিয়ানী থানার এসআই সজীব মন্ডল বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান বলেন, কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট চৌরঙ্গী মোড়ে সড়কে ইজিবাইক পার্কিংকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১ শ’ ৫০ জনকে আসামি করে রোববার রাতে এসআই সজীব মন্ডল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরীহ কাউকেই এ মামলায় আসামি করা হচ্ছে না। অযথা কাউকে পুলিশ হয়রানি করছে না। এ ঘটনায় জড়িত ও দোষীদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গ্রেফতার এড়াতে গ্রামগুলো পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, কাশিয়ানী উপজেলার রাজপাট চৌরঙ্গী মোড়ে সড়কের ওপর ইজিবাইক পার্কিংকে কেন্দ্র করে রাজপাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার মুন্সী ও ইজিবাইক চালক বরইহাট গ্রামের আরমানের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় তাদের দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডের ঘটনা ঘটে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাজপাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইব্রাহিম মোল্যা ও সহ-সভাপতি আবুল বাশার মুন্সীর সমর্থকরা দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে রাজপাট, বরইহাট, দৈহিসার, বড়বাহিরবাগ, ধোপাপাড়া, শুক্তাগ্রাম, নাটগ্রামের লোকজন রামদা, ঢাল, সড়কি, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে কাশিয়ানী থানার ওসি বিপুল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় উভয়পক্ষের উত্তেজিত লোকজনের ছুঁড়া ইটের আঘাতে কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান ও ৬ পুলিশ সদস্যসহ ৪৫ জন আহত হন। আহতদের কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
© All rights reserved 2000-2025 © kalerchaka.Com
Leave a Reply