বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের দক্ষতায় আগ্রহী হয়ে এই খাতে সহযোগিতায় দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় সৌদি আরব। সৌদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কোম্পানির (এসসিএআই) প্রধান নির্বাহী আয়মান আল রাশেদ এ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল রোববার রিয়াদে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্বের জন্য সৌদি আরবকে স্বাগত জানান।
বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স নিয়ে কাজ করছে। আইসিটি সেক্টর বাংলাদেশের জন্য একটি বিকাশমান সেক্টর। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা গ্রহণ করে। যার মূল বিষয়গুলো হচ্ছে- একটি উন্নত দেশ, একটি সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি।
প্রতিমন্ত্রী কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে এসসিএআই’র প্রধান নির্বাহীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় মিশন উপপ্রধান আবুল হাসান মৃধা ও দূতাবাসের ইকনমিক মিনিস্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান উপস্থিত ছিলেন।
রিয়াদে ডিজিটাল কোপারেশন অর্গানাইজেশন (ডিসিও) আয়োজিত এক সেমিনারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ‘ডিজিটাল অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি’ বিষয়ে বক্তব্য দেন। অতিথি দেশ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত হওয়ার পথে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ই-কমার্সের বাজারের আকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৩.১ বিলিয়ন ইউএস ডলার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন মোবাইল আর্থিক পরিষেবা ব্যবহারকারীরা প্রায় ২০২ মিলিয়ন ইউএস ডলারের বেশি লেনদেন করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদবিহীন অর্থনীতি গড়ে তোলার পথে রয়েছে এবং ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেক্টরে লেনদেন সহজ করতে বাংলাদেশ সরকার বিনিময় অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার মূল স্তম্ভ হলো, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট ইকোনমি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন স্টার্টআপে বিনিয়োগে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আমাদের নিজস্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে প্রতিশ্রুতিশীল স্টার্টআপে বিনিয়োগ প্রদান করে যাচ্ছি। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় দুই হাজার পাঁচশত স্টার্টআপ রয়েছে যেখানে গত ৫ বছরে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। বিভিন্ন স্টার্টআপ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে প্রায় ১.৫ মিলিয়নেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের জিডিপিতে ২ শতাংশের বেশি অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
এর আগে গত শনিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সৌদি আরবের রিয়াদ পৌঁছালে সৌদি আইসিটির ভাইস মিনিস্টার হাইথাম আলওহলি ও সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী স্বাগত জানান।
© All rights reserved 2000-2023 © kalerchaka.Com
Leave a Reply